নিজস্ব প্রতিবেদক : এবারই প্রথম ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন দলীয় প্রতীকে এবং ইভিএম পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হলো।
নির্বাচনের পূর্বে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির যথাক্রমে নৌকা ও ধানের শীষের পোস্টারে রাজধানী ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে রাজপথ সয়লাব হয়ে যায়। নির্বাচনি প্রচারণায় দুই দলেরই হাজার হাজার নেতাকর্মী মাঠে সরব ছিলেন দিনরাত। মিছিল, মাইকিং আর পথসভার শহরে পরিণত হয় ঢাকা। নির্বাচনি প্রচারণার গতিপ্রকৃতি দেখে অনেকেই মন্তব্য করেন, ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং ভোটার উপস্থিতি ব্যাপক হবে।
কিন্তু বাস্তবে উল্টো ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি। উত্তর ও দক্ষিণে বিজয়ী দুই প্রার্থীর চেয়ে পরাজিত দুই প্রার্থী অর্ধেক ভোট পান। অর্ধেক কেন্দ্রের ফলাফল পেয়েই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলাম নিশ্চিত হয়ে যান, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের পরবর্তী সিটি মেয়র তারাই।
সিটি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতিও ছিল অনেক কম। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র পদে ভোট পড়েছে ২৫.৩০ শতাংশ, আর দক্ষিণে ভোট পড়েছে ২৯ শতাংশ। গড় ভোট পড়েছে ২৭.১৫ শতাংশ। কম ভোট পড়ার পেছনে বিশেষজ্ঞরা অনেকগুলো কারণ চিহ্নিত করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জনপ্রিয় প্রার্থী না থাকা, ইভিএম সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচার, ৩ দিনের ছুটিতে অনেক ভোটারের ঢাকা ত্যাগ, ভোটের দিন যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকা, সহিংসতার আশঙ্কা ও জনমতের প্রতিফলন নিয়ে সংশয় Ñ এসব কারণে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট কম পড়েছে।
ইসি সূত্রমতে, এ নির্বাচনে মেয়র পদে উত্তরে ৩০ লাখ ১২ হাজার ৫০৯ ভোটারের মধ্যে ৬ প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন ৭ লাখ ৬০ হাজার ৮৫১ ভোটার। অর্থাৎ এ সিটিতে ২২ লাখ ৫২ হাজার ৮৫১ ভোটার ভোট দেননি। আর দক্ষিণে ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৫৯ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৭ লাখ ১১ হাজার ৪৮৮ ভোটার। অর্থাৎ ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৬৭১ জন ভোটার ভোট দেননি।
ভোটের এ পরিসংখ্যান বলছে ঢাকার অধিকাংশ ভোটারই অজানা কারণে ভোটদানে বিরত থেকেছেন। তারা ভোটদানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। কেন ভোটাররা ভোটদানে আগ্রহ হারিয়েছেন Ñ তা নিয়েই এখন চলছে নানামুখী বিশ্লেষণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নানা কারণেই ভোটের প্রতি ভোটারদের আগ্রহ কমে যেতে পারে। কেউ বলছেন, ইভিএমে জাল ভোট দেয়ার সুযোগ থাকে না বা ব্যালট পেপার ছিঁড়ে ব্যালট বাক্স ভরানোর সুযোগ নেই বলে ভোটের হার কম হতে পারে। কিন্তু ইভিএম ভোটে সর্বোচ্চ ৮১.৪০ শতাংশ ভোট পড়ারও নজির আছে। গত ১৩ জানুয়ারি বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার নির্বাচনে এই পরিমাণ ভোট পড়ে। একই দিন পাবনার মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোট পড়ে ৭৪.৩২ শতাংশ। সেখানেও ভোট হয়েছিল ইভিএমে। এর আগে ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে ৬টি আসনে ইভিএমে ভোট হয় তাতে গড়ে ৫১.৪২ শতাংশ ভোট পড়ে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৯ আসনে ভোট পড়ে ৬২.৮৭ শতাংশ, ঢাকা-৬ আসনে পড়ে ৪৫.২৬ শতাংশ এবং ঢাকা-১৩ আসনে পড়ে ৪৩.৭ শতাংশ ভোট।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার ঢাকা সিটি নির্বাচনে ভোটের দিনসহ ৩ দিন ছুটি ছিল। এ সময় অনেকে ঢাকার বাইরে নিজেদের স্থায়ী ঠিকানায় চলে গেছেন। ঢাকায় ভোটার হলেও তাদের স্থায়ী ঠিকানা ঢাকায় নয়। আবার ঢাকার কোনো এলাকার শতভাগ ভোটার সে এলাকায় বসবাস করেন না। বাসা পরিবর্তন করে অন্য এলাকায় চলে যান। ভোটের দিন যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তারা তাদের জন্য নির্ধারিত কেন্দ্রে ভোট দিতে আসতে পারেননি। দেখা গেল, কারো বাসা রায়েরবাগ, আগে তার বাসা ছিল বাসাবো এবং তিনি সেখানেরই ভোটার। ভোটের দিন যানবাহন বন্ধ থাকায় তিনি রায়েরবাগ থেকে বাসাবো আসার জন্য কোনো যানবাহন পাননি, ফলে ভোটও দিতে পারেননি। এ বিষয়গুলো এবারের নির্বাচনে ভোটের হার কমিয়েছে।
আবার অনেকের মতে, এবার নির্বাচনে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল ইভিএমবিরোধী যে প্রচার চালিয়েছে তাতেই এ প্রযুক্তির ওপর ভোটাররা আস্থা রাখতে পারেননি। বিশেষ করে প্রবীণ ভোটাররা ইভিএমে ভোট দেয়ার বিষয়ে সবচেয়ে অনাস্থা দেখিয়েছেন। বেশিরভাগ কেন্দ্রেই প্রবীণ ভোটারের উপস্থিতি খুবই কম দেখা গেছে।
এদিকে ওয়ার্ডভিত্তিক ফল বিশ্লেষণ করে জানা যায়, কম ভোটের হার দুই সিটির সব এলাকাতেই প্রায় একই রকম। ঢাকা দক্ষিণের ১ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৪৬ হাজার ৯৭৬ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১২ হাজার ৩৪৫ জন, অর্থাৎ ২৬ শতাংশের কাছাকাছি ভোটার। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৭ হাজার ৯২৮ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৫ হাজার ৭৬ জন বা ২৮ শতাংশ।
সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও ভোট না দিতে যাওয়ার নানা যুক্তি রয়েছে। তারা বলেছেন, নির্বাচনি প্রতিশ্রুতির সময় মেয়র পদপ্রার্থীরা বাস্তবায়নযোগ্য নয় Ñ এমন অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সমালোচনা হয়েছে এবং বোঝা গেছে আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে নির্বাচিত মেয়রদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তেমন কিছুই করার নেই। শুধু ঢাকার মেয়র নন, অন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধরাও নির্বাচিত হয়ে গেলে ভোটারদের আর খবর রাখেন না। এ অবস্থায় তাদের ভোট দেয়াকে কর্তব্য মনে করেননি অনেক ভোটার।
ভোটকেন্দ্রে এসে কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোট দিলেও মেয়র পদে ভোট দেননি আবার মেয়র পদে ভোট দিয়েছেন, কাউন্সিলর প্রার্থীকে ভোট দেননি এমন ভোটারের সংখ্যা ২ সিটিতে ৩ হাজার ৯২ জন। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ১ হাজার ৫৩০ জন এবং দক্ষিণে ১ হাজার ৫৬২ জন। রিটার্নিং অফিসার স্বাক্ষরিত ফলাফল শিটে এই ভোটারদের ভোট অবৈধ বা বাতিল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে; যা কম ভোট প্রদানে ভূমিকা রেখেছে।
ডিসিসি নির্বাচনের পর থেকেই পথে-ঘাটে, আলোচনায়, আড্ডায়, হোটেলে চায়ের কাপে এখন সাধারণ মানুষের আলোচনার প্রধান বিষয় ঢাকার দুই নগরীর নির্বাচনে কম ভোটারের উপস্থিতি। এতে স্থান পাচ্ছে অনেক কারণই।
৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন ভবনে ভোটের ফল নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, কম ভোট পড়ায় আমরা সন্তুষ্ট না। প্রচার ছিল ব্যাপক। আমাদের ধারণা ছিল ন্যূনতম ৫০ শতাংশ ভোট পড়বে। কিন্তু এ ধারণার চেয়েও কম ভোট পড়েছে। ভোট সংগ্রহের দিক থেকে আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট না।
সাবেক নির্বাচন কমিশনাররা বলছেন, ভোটারের উপস্থিতির হার খুবই নৈরাশ্যজনক। এ হার তো ৭৫ শতাংশও হতে পারত। গত ৮ বছরে বাংলাদেশে ভোটার যে হারে বাড়ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়ে উৎসাহ হারানোর কারণগুলো খুঁজে বের করার সময় এসেছে। তারা বলছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর ভোটারদের আস্থাহীনতা, প্রচারে বড় দুই রাজনৈতিক দলের কেন্দ্র দখলের পাল্টাপাল্টি হুমকি ইত্যাদি ভোটারের কেন্দ্রবিমুখ হওয়ার অন্যতম কারণ। ভোটাররা মনে করছেন, তাদের ভোটে কোনো পরিবর্তন ঘটবে না; যা হওয়ার তা-ই হবে।
অনেকে বলছেন, ভোটারদের প্রতি নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা খুব একটা মনোযোগ দেননি। নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবহারের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়নি। উপরন্তু অনেক প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার চালানোয় ভোটাররা উল্টো বিরক্ত হয়েছেন। একজন ভোটারের ভোট যে মূল্যবান, এটি মনে করছেন না ভোটার নিজে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রচারে সবার অংশগ্রহণের কারণে তাদের ধারণা ছিল, এবারের সিটি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৫০ শতাংশের বেশিই হবে। কিন্তু ভোটগ্রহণের দিন পরিবেশ উৎসবমুখর ছিল, তা বলা যাবে না। অনেক কেন্দ্র থেকে প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়ার প্রচার চালানো হয় সকাল থেকেই। ফলে সংঘর্ষের আশঙ্কায় ভোটারদের উপস্থিতি কমে গেছে। একই দলের একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কায়ও কেউ কেউ ভোট দিতে যাননি। এছাড়া ইভিএমে ভোট প্রদানকালে ফিঙ্গার প্রিন্ট বিড়ম্বনায় পড়েছেন ভোটারদের কেউ কেউ। এ কারণটিও অন্যান্য ভোটারকে কেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহিত করেছে।
কম ভোটারের জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মানুষের ভোটকেন্দ্রে আসার যে প্রবণতা, বিএনপির ভুল রাজনীতির কারণে তা কমে গেছে। এর পাশাপাশি তিনি আহ্বান জানান, ভবিষ্যতে ভোটারদের আগ্রহী করতে ইভিএম নিয়ে প্রচার বাড়ানোর। এ ছাড়া স্থানীয় নির্বাচনের সময় গণপরিবহন বন্ধের যে সিদ্ধান্ত, তা পুনর্বিবেচনা করা যায় কি নাÑ এ নিয়েও আলোচনার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের এ মুখপাত্র।
কম ভোট পড়ার ৩টি কারণ রয়েছে বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। ৩ ফেব্রুয়ারি নিজ দপ্তরে বসে তিনি যেসব কারণ তুলে ধরেন, সেগুলো হলো
প্রথমত. টানা ৩ দিন ছুটির কারণে অনেকের গ্রামে চলে যাওয়া;
দ্বিতীয়ত. ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে মানুষের মাঝে ভুল ধারণা ছড়িয়েছে বিএনপি এবং
তৃতীয়ত. নির্বাচনকে বিএনপি আন্দোলনের অংশ হিসেবে নেয়ায় অনেকে ভোট দিতে যাননি।
৫ বছর আগে ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর সিটিতে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৩৭ শতাংশ, দক্ষিণ সিটিতে ৪৮ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে ভোট পড়েছিল ৪৭ শতাংশ। তিন সিটিকে একদিনেই ব্যালট পেপারে ভোট হয়েছিল। গড়ে ভোট পড়েছিল ৪৩ শতাংশ। এরপর ২০১৯ সালে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদের উপনির্বাচনে ভোট পড়ে ৩১ শতাংশ। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে যে ২৯৪টি আসনে ব্যালট পেপারে ভোট হয়েছে, সেখানে ভোট পড়েছে ৮০ শতাংশ। ইভিএমে অনুষ্ঠিত ৬ আসনে গড়ে ভোট পড়েছে ৫১ শতাংশ। সর্বশেষ ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হয়, তাতে ভোট পড়ে মাত্র ২২.৯৪ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে মূল নগরীর তুলনায় সর্বশেষ নগরীতে যুক্ত এলাকাগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল বেশি, প্রায় ৪০ শতাংশ। মূল নগরীতে সেই তুলনায় ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। সব মিলিয়ে দুই সিটিতে গড়ে ভোট পড়েছে ২৭ শতাংশ। উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারের পর ধারাবাহিকভাবে কেন্দ্রে ভোটার অনুপস্থিতি গণতন্ত্রের জন্য নেতিবাচক বার্তাবাহী।
অনেকে ৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষাকেও কম ভোট পড়ার জন্য দায়ী করছেন। এসএসসি পরীক্ষা পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। আর সিটি ভোট হওয়ার কথা ছিল ৩০ জানুয়ারি। কিন্তু ওই দিন সরস্বতী পূজা থাকায় ভোটের নতুন তারিখ নির্ধারণ হয় ১ ফেব্রুয়ারি এবং এসএসসি পরীক্ষার নতুন তারিখ নির্ধারণ হয় ৩ ফেব্রুয়ারি। এসএসসি পরীক্ষার এই পিছিয়ে যাওয়াটা অনেক অভিভাবক ভালোভাবে নিতে পারেননি। তাছাড়া ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া নির্বাচনি প্রচারণা এতটাই মাত্রা ছাড়িয়ে যায় যে, এতে এসএসসি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ছিলেন দারুণ বিরক্ত। ফলে অনেক অভিভাবকেরই ক্ষোভ গিয়ে পড়ে সিটি ভোটের ওপর। ঢাকা সিটিতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অভিভাবক নিতান্তই কম নয়। তাদের অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ায় ভোটার উপস্থিতি কমে যায় বলে অনেকে মনে করেন।
তবে যে যাই-বলুক না কেন, স্বদেশ খবর-এর নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও সহকারী সম্পাদক এম নিজাম উদ্দিন তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক ভোটারের অনুপস্থিতি রাজনীতিসচেতন মানুষকে খুবই ভাবাচ্ছে। ভোটের এ চিত্র বলছে, মানুষ ক্রমেই রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়ছে। এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়। তাছাড়া আরো উদ্বেগের বিষয় হলো সাধারণ ভোটারের বাইরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নির্ধারিত ভোটার উপস্থিতিও (ভোট ব্যাংক) এ ভোটে প্রতিফলিত হয়নি। তার মানে আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতাকর্মী ও সক্রিয় সমর্থকরাও কি ভোটবিমুখ অর্থাৎ রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়ছেন? এসব প্রশ্নই এখন গভীরভাবে ভাবাচ্ছে রাজনীতিক ও রাজনীতিসংশ্লিষ্টদের।’
0 Comments