দুর্যোগ মোকাবিলায় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভূমিকা

 স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি আধা সামরিক বাহিনী হিসেবে কাজ করে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় দেশের অপরাপর বাহিনীর পাশাপাশি আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায়ও অপরাপর বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।



সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান/স্থাপনা ও শিল্প কারখানায় আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষার লক্ষ্যে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে ‘সাধারণ আনসার’ গঠন করা হয়। সাধারণ আনসারের জন্য জনবল বাছাইপূর্বক তাদেরকে নির্দিষ্ট জেলা এবং আনসার ভিডিপি একাডেমি, সফিপুর, গাজীপুরে বিভিন্ন মেয়াদে মৌলিক ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এসব সাধারণ আনসারের মধ্য থেকে দেশের জরুরি ও সংকটময় মুহূর্তে জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনের জন্য অঙ্গীভূত করা হয়। বর্তমানে দেশের বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, ইপিজেডসহ গুরুত্বপূর্ণ ৪ হাজার ২১৪টি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় প্রায় ৫০ হাজার অঙ্গীভূত আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সকল নির্বাচন, ঈদ, পূজা, বিশ্ব ইজতেমা, বর্ষবরণ, শপিং মল, বাণিজ্য ও বইমেলা, রেল স্টেশন, ট্রাফিক কন্ট্রোলসহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সাধারণ আনসার সদস্যরা জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৪ ও ২০১৫ সালে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে দেশে অস্থিরতা তৈরি করা হলে সেই সংকটময় মুহূর্তে এই বাহিনী অপারেশন রেল রক্ষা ও অপারেশন সড়ক/মহাসড়ক নিরাপত্তায় সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও এ বাহিনীর কার্যক্রম অনস্বীকার্য। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প প্রভৃতি দুর্যোগ মোকাবিলায় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার জন ভলান্টিয়ার তৈরি করেছে। জানা গেছে, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধেও এই ভলান্টিয়ারদের তৈরি রাখা হয়েছে।

বিগত ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ও ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় দুর্যোগকবলিত উপকূলীয় এলাকায় সর্বমোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪ জন আনসার-ভিডিপি সদস্য-সদস্যা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।

গত ৬ আগস্ট হতে ১০ আগস্ট ২০১৯ পর্যন্ত দেশব্যাপী ডেঙ্গু বিস্তার প্রতিরোধে আনসার-ভিডিপির প্রতিটি কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সদস্য-সদস্যাবৃন্দ জনসচেতনতামূলক র‌্যালি আয়োজন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করেছে এবং সারাদেশে ‘গুজব’ বিস্তার প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। একইভাবে বর্তমানে করোনা গুজবের কারণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে সরকার গঠিত মনিটরিং টিম ও টাস্কফোর্সকে সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে চলেছে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।


দুই.

১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইতিহাসের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। মহান ভাষা আন্দোলনে ময়মনসিংহের আনসার প্লাটুন কমান্ডার আব্দুল জব্বার শহীদ হন, যার আতœত্যাগ ও অবদানে এ বাহিনী গর্বিত।

১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় দেশের সীমান্ত ফাঁড়িগুলোতে তৎকালীন ইপিআরের সাথে আনসার বাহিনীকে বিওপি প্রতিরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়। তাছাড়া ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে আনসার বাহিনী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে দায়িত্ব পালন করে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের আম্রকাননে (মুজিব নগরে) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকারকে আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণকালে আনসার প্লাটুন কমান্ডার ইয়াদ আলীর সাথে ১২ জন বীর আনসার সদস্য ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৯ জন কর্মকর্তা, ৩ জন কর্মচারী ও ৬৫৮ জন সদস্য শহীদ হন। এ বাহিনীর ৪০ হাজার থ্রি নট থ্রি রাইফেল ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল শক্তি। মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বাহিনীর ১ জন সদস্য বীর বিক্রম এবং ২ জন সদস্য বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত হন।

মহান মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় এ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। বিশেষ করে ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

অপারেশন রেলরক্ষা ২০১৩/১৪ কার্যক্রমে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রায় ৮ হাজার ৩২৮ জন সদস্য ৩৬টি জেলার ১ হাজার ৪১টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থেকে সকলের আস্থা অর্জন করেছে। ২০১৫ সালেও সরকারের নির্দেশে এ বাহিনীর ৮ হাজার ৮৯৬ জন সদস্য ৩৭টি জেলার ১ হাজার ১১২টি পয়েন্টে রেল নিরাপত্তা রক্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে।

রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনের লক্ষ্যে ২০১৩ হতে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সারাদেশের সড়ক ও মহাসড়কের ৯৯৩টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে ১২ জন করে ১১ হাজার ৯১৬ জন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করে।

দেশের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং স্থল বন্দরগুলোতে সাধারণ ও ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য-সদস্যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছে। বর্তমানে তারা বিমান ও স্থলবন্দরগুলোতে করোনা প্রতিরোধে কাজ করে চলেছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সন্ত্রাস দমনে ১৯৭৬ সাল হতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ব্যাটালিয়ন আনসার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ১৯ জন সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন। এছাড়া প্রায় ৩০০ সদস্য বিভিন্ন কারণে অকাল মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া প্রায় শতাধিক হিল আনসার ও হিল ভিডিপি সদস্য পার্বত্যাঞ্চলে বিভিন্ন সম্মুখযুদ্ধে ও সংঘাতে নিহত হন।

জাতীয় সংসদসহ বিভিন্ন নির্বাচনে জননিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বিশেষ করে মহিলা নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েনের ফলে নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে মহিলা ভোটারের উপস্থিতি বর্তমানে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে আনসার বাহিনীর অনেক সদস্য-সদস্যা গুরুতর আহত ও নিহত হয়েছেন।

এছাড়া হলি আর্টিজানসহ বিভিন্ন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন অভিযানে অস্ত্র উদ্ধার, সম্মুখযুদ্ধ, নাশকতার ঘটনায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রায় অর্ধশতাধিক সদস্য-সদস্যা গুরুতর আহত হয়।


তিন.

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। ঐতিহ্যবাহী ‘আনসার বাহিনী’ ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ১৯৪৬ সালে সৃষ্ট হোমগার্ডের আদলে ১৯৪৮ সালে গঠিত হয়।

সচেতন জনসম্পদ তৈরির পাশাপাশি সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা, নির্বাচনি এলাকা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিতে (বিশ্ব ইজতেমা, দুর্গাপূজা ইত্যাদি) দায়িত্ব পালন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনাসহ বিভিন্ন সহযোগিতামূলক কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। এ বাহিনী দেশের অর্থনীতিবে স্বাবলম্বী করতে আন্তরিকতার সাথে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি ও গ্রামভিত্তিক বিভিন্ন আধুনিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জঙ্গি, সন্ত্রাস, নারী ও শিশু পাচার রোধেও বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সহযোগী বাহিনী হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহায়তা করে থাকে।

অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা এবং যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী যথাযথ ভূমিকা পালন করে দেশ ও জাতির আস্থা অর্জন করেছে। ৬৬ বছরের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী একটি সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী দেশপ্রেমিক বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠেছে। দেশের প্রায় ৬০ লাখ সদস্য-সদস্যাকে দুই হাত কাজে লাগিয়ে ১ কোটি ৫০ লাখ লোকের কর্ম ও শ্রমের মাধ্যমে সরকারের গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে এ বাহিনী। আমাদের দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী যাতে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে সমাজে ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারে এবং অর্থ উপার্জন করতে পারে সে জন্য বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উদ্যোগে গ্রাম, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন ধরনের পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে শুধু দেশ নয় বিদেশে গিয়েও অর্থ উপার্জন করছেন অসংখ্য বেকার। এছাড়া সড়কপথের নিরাপত্তার পাশাপাশি বাংলাদেশের গণমানুষের জনপ্রিয় বাহন রেলগাড়ি, রেল স্টেশন এবং রেলপথের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে আনসার-ভিডিপি বাহিনী। অনেকটা স্বেচ্ছাসেবীর আদলে গড়ে উঠেছে এই সুশৃঙ্খল বাহিনী।

এ বাহিনীর ৩৬টি পুরুষ ও ২টি মহিলা ব্যাটালিয়নের সদস্য-সদস্যারা পার্বত্য চট্টগ্রাম, রামু, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল তথা সমগ্র দেশে সামরিক বাহিনী, পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জননিরাপত্তার স্বার্থে নিয়োজিত রয়েছে।

জাতীয় উন্নয়ন ও দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা নিন্মোক্ত দায়িত্বগুলো পালন করে থাকেন:

ষ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহকে সাহায্য করা।

ষ দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সহায়তা করা।

ষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সাধারণ মানুষকে সহায়তা করা।

ষ সরকারি নির্দেশে জাতীয় উন্নয়ন ও আর্থসামাজিক কাজে সহায়তা করা।

ষ দেশের সিভিল প্রশাসনকে সহায়তা করা।

ষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনীকে সহযোগিতা করা। যেমন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন, বিশ্ব এজতেমা, দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ্যতাসম্পন্ন আনসার ও ভিডিপি বাছাই ও নিয়োগ প্রদান।

ষ আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্লাটুনভুক্ত সদস্য-সদস্যাদের যোগ্যতানুসারে বিভিন্ন পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য বিভাগীয় প্রশিক্ষণকোর্সে প্রশিক্ষণার্থী প্রেরণ করা।

ষ সেলাই, এয়ারকন্ডিশনার, ফ্রিজ, ইলেকট্রিশিয়ান, বেসিক কম্পিউটার, মোটর ড্রাইভিং, মোবাইল ফোন সেট মেরামত, ওয়েল্ডিং সোয়েটার নিটিংসহ বিভিন্ন পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন প্রশিক্ষণার্থী বাছাই ও প্রশিক্ষণের জন্য বিভাগীয় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কোটা মোতাবেক প্রেরণ নিশ্চিতকরণ।

ষ উপজেলা প্রশাসনকে উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে সহযোগিতা করা।


চার.

ব্যাটালিয়ন আনসার আইন ১৯৯৫ অনুসারে এ বাহিনীর দায়িত্ব হলো :

ষ জননিরাপত্তামূলক কোনো কাজে সরকার বা সরকারের অধীন কোনো কর্তৃপক্ষকে সহায়তা প্রদান করা।

ষ দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক নির্দেশিত যেকোনো জনকল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ করা।

ষ দেশের যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার কর্তৃক নির্দেশিত কাজে অংশগ্রহণ করা এবং

ষ সংবিধান দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য কাজ করা।

বর্তমানে ১৬টি ব্যাটালিয়ন (৬ হাজার ৪৬৪ জন আনসার) পার্বত্য চট্টগ্রামে এবং বাকি ২২টি ব্যাটালিয়ন (৮ হাজার ৮৮৮ জন আনসার) সমতল এলাকায় কর্মরত। এরা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা শহর, দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল, র‌্যাবে প্রেষণে অন্তর্ভুক্তসহ দেশের অন্যান্য স্থানে কর্মরত।

মহিলা ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয় নারী সমাজের অগ্রায়ন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভূমিকা রাখার সুযোগ দান এবং তাদের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে। মহিলা ব্যাটালিয়ন সদস্যরা র‌্যাব-এর মতো এলিট বাহিনীতেও প্রেষণে অন্তর্ভুক্ত হয়ে কর্মরত রয়েছে।


পাঁচ.

এ কথা অনস্বীকার্য যে, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিয়মিত ও অনিয়মিত সদস্যরা তৃণমূলের প্রধান বাহিনী হিসেবে ইতোমধ্যে তাদের সক্ষমতা জনগণের সামনে তুলে ধরতে পেরেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায়ও এ বাহিনীর সদস্যরা তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। বিমানবন্দর দিয়ে আগত বিদেশফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টিনে নিতে এই বাহিনীর সদস্যরা অপরাপর বাহিনীকে সহায়তা করছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণের কারণে বিদেশফেরত যাত্রীরা এখন কোয়ারেন্টিন সেন্টারে যেতে বাধ্য হবেন। এর মাধ্যমে দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সহনীয় পর্যায়ে থাকবে বলে আশা করা যায়।

Post a Comment

0 Comments